হাইকোর্টের রায়ে টিকলো না সৎ মায়ের জারিজুরি, বাড়ি ফিরে পাচ্ছেন কন্যারা
বাড়ির সামনে প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরা

হাইকোর্টের রায়ে টিকলো না সৎ মায়ের জারিজুরি, বাড়ি ফিরে পাচ্ছেন কন্যারা

সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের সঙ্গে ভারতীয় নাগরিক আঞ্জু কাপুরের দ্বিতীয় বিয়ে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের এই রায়ে সৎ মায়ের জারিজুরি আর টিকলো না, বাড়ি ফিরে পাচ্ছেন কন্যারা।

এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে আজ বুধবার (৭ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আজ আদালতে জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

এ রায়ের ফলে স্ত্রী হিসেবে আঞ্জু কাপুরকে দেওয়া জগলুল ওয়াহিদের বাড়ির উইলের আইনগত ভিত্তি থাকলো না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ। তিনি বলেন, ওই বাড়িতে এখন বসবাস করা জগলুল ওয়াহিদের কন্যারা মুসলিম আইন অনুযায়ী তাদের সম্পত্তির অধিকার পাবেন।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আমরা জেনেছি আঞ্জু কাপুর বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে গিয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় যে, গৃহকর্তার মৃত্যুর পর মালিকানা নিয়ে বিরোধে তার দুই মেয়ে অবস্থান নেন বাড়ির সামনে। ওই দুই বোনের দাবি, বাড়ির দখল বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা ভারতীয় নাগরিক আঞ্জু কাপুরের হাতে। তিনি কিছুতেই ওই বাড়িতে তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না। একপর্যায়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ প্রতিবেদন নজরে নিয়ে হাইকোর্ট স্ব-প্রণোদিত আদেশ দেন।

আদেশের পর মেয়েদের তাদের বাবা মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কের বাসায় প্রবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফায় হাইকোর্টে শুনানি হয় এবং হাইকোর্ট রুল জারি করেন।

একইসঙ্গে ভারতীয় নাগরিক ও হিন্দু নারী আঞ্জু কাপুরের সঙ্গে জগলুল ওয়াহিদের বিয়ে ও বাড়ি উইল করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের চারজন সিনিয়র আইনজীবীর (অ্যামিকাস কিউরির) অভিমত শুনেন হাইকোর্ট। অবশেষে আইনজীবীদের অভিমত বিবেচনায় নিয়ে এবং এর আগে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে আজ রায় দিলেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে মোস্তফা জগলুলের মৃত্যু হয়। মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ পেশায় পাইলট ছিলেন। ভাইবোনদের মধ্যে শুধু সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশে নেই। তাঁর মৃত্যুর পর বাড়ির সামনে অবস্থান নেন মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরা। তারা বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

মুশফিকা গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ১৯৮৪ সালে তার মাকে নিয়ে বাবা গুলশানের এই বাসাতেই সংসার শুরু করেছিলেন। তাদের জন্ম এই বাড়িতে। ২০০৫ সালে তাদের মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়। পরে আঞ্জু কাপুর নামে এক ভারতীয়কে তাদের বাবা বিয়ে করেন। তিনি একাই এখন এই বাড়ির ভোগদখল করে আসছিলেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।