ধর্মীয় বিষয়ে স্পর্শকাতর মন্তব্য: শেরপুরের জেলা জজকে প্রত্যাহার
বিচারক (প্রতীকী ছবি)

অর্থ আত্মসাৎকারীরা জাতির শত্রু: আদালত

ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎকারীরা জাতি ও রাষ্ট্রের শত্রু উল্লেখ করে তাদেরকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আদালত।

টাকা আত্মসাতের একটি মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আজ বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন এ মতামত দিয়েছেন।

পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এদিন রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালকসহ চার জনকে পৃথক দুই ধারায় ১৭ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি হলেন- পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের সাবেক পরিচালক বিশ্বজিৎ কুমার রায়, তার স্ত্রী শিল্পী রানী রায়, ভাই ইন্দ্রজিৎ কুমার রায় ও প্রতিষ্ঠানের সাবেক নির্বাহী পরিচালক হেলাল উদ্দিন।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি আত্মসাৎ করা ১০ কোটি ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৬০৭ টাকা তাদের অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। যা তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ থেকে সম অংশে আদায়যোগ্য। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের প্রত্যেককে আরও দুই বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আরেক ধারায় এ চারজনকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ব্যাংকের/প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাৎকারীরা জাতি ও রাষ্ট্রের শত্রু। এই ধরনের অপরাধীদের আইনানুগ শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি সামাজিকভাবে প্রতিরোধ এবং সমাজে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে সর্বস্থানে বয়কট করা আবশ্যক মর্মে আদালত মনে করে। সুতরাং এই মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ বিবেচনা করে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।

প্রসঙ্গত, ১০ কোটি ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৬০৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি পল্টন থানায় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ঋণ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে পরস্পর যোগসাজশে কোনো জামানত ছাড়াই হিসাব খোলে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এ টাকা আত্মসাৎ করে।

মামলাটি তদন্ত করে একই ব্যক্তি ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর চারজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২২ সালের ৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভুক্ত ৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।