আয়ানের মৃত্যু: হাইকোর্টের রায়ের দিকে তাকিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন

আয়ানের মৃত্যু: হাইকোর্টের রায়ের দিকে তাকিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে রাজধানীর বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রোববার (২৮ জানুয়ারি) ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‌যে তদন্ত রিপোর্ট হয়েছে এবং হাইকোর্ট থেকে কি রায় দেয়, সেটা আমরা দেখি আগে। তারপর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, তদন্ত রিপোর্ট পেয়েছি এবং সেটা হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি আদালতে রয়েছে তাই এ নিয়ে আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তাহলে আদালত অবমাননা হয়ে যাবে।

তদন্তে কি পেয়েছেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্তে আমরা যা পেয়েছি তা গোপনীয় বিষয়। হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু হাইকোর্টে প্রক্রিয়াধীন এই মুহূর্তে আমার পক্ষে বলা মুশকিল।

শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় রোববার হাইকোর্টে ১৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে উপ-পরিচালক (আইন) ডা. পরিমল কুমার পাল এ প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়ান ‌চাইল্ডহুড অ্যাজমা সমস্যায় ভুগছিল। শ্বাসকষ্টের জন্য আয়ানকে মাঝে মাঝে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দেওয়া লাগতো। সুন্নতে খৎনার অপারেশনের আগে ওয়েটিং রুমে তাকে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়টি চিকিৎসকদের জানানো হয়নি।

প্রতিবেদনের মতামত অংশে আরও বলা হয়, শিশু আয়ানের অপারেশনের সময় স্বাভাবিক রক্তপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

চার দফা সুপারিশ

সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মতো আর কারও যেন মৃত্যু না হয় এজন্য চার দফা সুপারিশ করেছে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি। সুপারিশগুলো হলো–

• হাসপাতালে একাধিক এনেসথেসিওলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া।
• রোগী ও রোগীর আত্মীয় স্বজনকে এনেসথেসিয়া ও অপারেশনের ঝুঁকিসমূহ ভালোভাবে অবহিত করা।
• হাসপাতালে আইসিইউ ব্যবস্থা রাখা।
• সরকারের অনুমোদনের পরে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনটি দাখিল করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।

আদালত প্রতিবেদনটি অ্যাফিডেভিট আকারে দাখিলের নির্দেশ দেন এবং শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার দিন ধার্য করেন।