সাংবাদিক কাজলের তিন মামলার কার্যক্রম স্থগিত
ফটোসাংবাদিক সফিকুল ইসলাম কাজল (পুরনো ছবি)

সাংবাদিক কাজলের তিন মামলার কার্যক্রম স্থগিত

ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে করা তিন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। দুই মাসের জন্য এসব মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন আদালত।

এ বিষয়ে তার তিনটি আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ বুধবার (১ জুন) বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো.আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা তিন মামলার সকল কার্যক্রম স্থগিত করেছেন আদালত।

এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি জানান, আদালত তিন মামলাতেই দুই মাসের জন্য বিচারকাজ স্থগিত করে আদেশ দিয়েছে। আগামী ২৭ জুলাই এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানির জন্য তারিখ রাখা হয়েছে।

গত বছরের ৮ নভেম্বর ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক তিন মামলায় চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় এই তিনটি মামলা দায়ের হয়।

চার্জ শুনানিকালে সাংবাদিক কাজল আদালতে হাজির ছিলেন। তার পক্ষে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম চার্জগঠনের প্রার্থনা করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তাকে পড়ে শোনান। এরপর তার কাছে জানতে চান, তিনি দোষী না নির্দোষ। এসময় কাজল নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।

এরপর আদালত তার বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দেন। পরে এ বিষয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন কাজল।

প্রসঙ্গত, যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়াকে জড়িয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় লেখালেখি করায় গত বছর ৯ মার্চ রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় কাজলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মাগুরা ১ আসনের সরকার দলীয় সাংসদ সাইফুজ্জামান শেখর। এরপর ১০ ও ১১ মার্চ রাজধানী হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও দুটি মামলা হয়।

মামলা হওয়ার পর গত বছর ১০ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরপুলের ‘পক্ষকাল’ অফিস থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল নিখোঁজ হন। ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন। পরে ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক।

ঢাকা থেকে নিখোঁজের ৫৩ দিন পর গত বছর ২ মে রাতে যশোরের বেনাপোলের ভারতীয় সীমান্ত সাদিপুর থেকে অনুপ্রবেশের দায়ে ফটো সাংবাদিক ও দৈনিক পক্ষকালের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজলকে আটক করে বিজিবি।

পরদিন অনুপ্রবেশের দায়ে বিজিবির দায়ের করা মামলায় আদালতে সাংবাদিক কাজলের জামিন মঞ্জুর হলেও পরবর্তীতে কোতোয়ালি মডেল থানায় দায়ের করা অপর একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

প্রায় সাড়ে আট মাস কারাভোগের পর গত বছর ২৫ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান কাজল। পরে তিন মামলায় কাজলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করলে মামলাটি বদলি হয়ে বিচারের জন্য সাইবার ট্রাইব্যুনালে আসে।